গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
ভূমি মন্ত্রণালয়
আইন অধিশাখা- ৩
প্রজ্ঞাপন

নং- ৩১.০০.০০০০.০৪৪.৩৯.০২৫.১৫-৭৭ (১২০০)                             তাং- ১৬ আষাঢ় ১৪২২৩০ জুন ২০১৫ খ্রিঃ।


    ভূমি উন্ন্য়ন করের হার সময়োপযোগী ও ন্যায়ানুগ করার লক্ষ্যে সরকার ভূমি মন্ত্রণালয়ের ইতঃপূর্বে জারিকৃত ৩০/০৫/১৯৯৫ তারিখের প্রজ্ঞাপন নং ভূঃমঃ/শা-৩/কর/১০০/৯২-১০৬ (১০০০) বাতিলক্রমে এতদ্বারা ভূমি উন্নয়ন কর অধ্যাদেশ ১৯৭৬ (১৯৯৩ সনের ২৯ নং আইন দ্বারা সংশোধিত) এর ৩ (১এ) উপাধারায় পদত্ত  ক্ষমতাবলে নিম্নরুপ শর্তাধীন এলাকা ও ব্যবহারভিত্তিক প্রতি শতক ভূমির বার্ষিক ভূমি উন্নয়ন করের পরিবর্তিত হার নির্ধারণ করিল।

১। কৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন করঃ

    (ক) ব্যক্তি ও পরিবারভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমান ৮.২৫ একর (২৫ বিঘার) পর্যন্ত হইলে কোন ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হইবে না। উক্ত মওকুফের আওতায় ইক্ষু আবাদ, লবণ চাষের জমি এবং কৃষকের পুকুর (বানিজ্যিক মৎস্য চায ব্যতীত) অন্তর্ভুক্ত হইবে: তবে নিম্নের (খ) দফায় বর্ণিত ভূমি অন্তর্ভূক্ত হইবে না।

    (খ) ব্যক্তি ও পরিবারভিক্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ ৮.২৫ একরের (২৫ বিঘার) অধিক হইলে বা কোন সংস্থা কর্তৃক যে কোন পরিমাণ কৃষি জমি অধিকৃত হইলে, যেকোন মালিক কর্তৃক চা, কফি, রাবার, ফুল বা ফলের বাগান এবং বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ, চিংড়ি চাষ, হাঁস মুরগির ও গবাদি পশুর খামার ইত্যাদি বিশেষ কাজে ভূমি ব্যবহার করিলে উক্ত প্রকার ভূমির পরিমাণ যাচাই হউক না কেন সম্পূর্ণ জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার বার্ষিক প্রতি শর্তাংশ ২/- (দুই) টাকা আদায় করিতে হইবে।

    (গ) উলিখিত (ক) দফায় বর্ণিত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের আওতাধীন কৃষি জমির সংশ্লিষ্ট প্রতিটি হোল্ডিং এর ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ বাবদ দাখিলা প্রদানের জন্য আবশ্যিকভাবে বার্ষিক ১০.০০ টাকা আদায় করিতে হইবে।

    (ঘ) কৃষি জমি গ্রামীণ বা পৌর যে এলাকাতেই হউক উপরে বর্ণিত হার ও শর্ত প্রয়োজ্য হইবে।

২। অকৃষি জমির ভূমি উন্নয়ন কর ঃ

ধাপ- কঃ
    ঢাকা, চট্রগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর ও সিলেট সিটিকর্পোরেশন ভূক্ত এলাকা।

ধাপ-খঃ

রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ভূক্ত এলাকা। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলা, সাভার, ধামরাই, চট্রগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড, হাটহাজারি ও কক্সবাজার জেলা সদরের পৌর এলাকা। নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার তারবো পৌর এলাকা এবং সোনারগাও উপজেলার কাচপুর ও মেঘনাঘাট এলাকা। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি, জামিরদিয়া, ধানসুর, ভানডাব, কাঠালি ও মেহেরবাড়ি মৌজা। নোয়াখালী জেলার চৌমুহনি পৌর এলাকা। রাজউকের আওতধীন পূর্বাচল আবাসিক এলাকা।

ধাপ- গঃ
    ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, নোয়াখালী, পাবনা, বগুড়া দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, যাশোর ও পটুয়াখালী জেলা সদরের পৌর এলাকা। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর, কালিয়াকৈর, কালিগঞ্জ, খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার আটরা গিলাতলা। ইউনিয়ন ও দামোদর ইউনিয়নের মশিখালি মৌজা। নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌর এলাকা। ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার লাকসাম ও চাদপুর জেলার হাজিগঞ্জ উপজেলা। ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা পৌর এলাকা এবং টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর পৌর এলাকা। নীলমাফামারী জেলার সৈয়দপুর পৌরসভা। কিশোরগঞ্জ জেলা ভৈরববাজার পৌর এলাকা।

ধাপ- ঘ ঃ
    অন্যন্য জেলা সদর পৌর এলাকা। অন্যান্য সকল প্রথম শ্রেণীর পৌর এলাকা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরি ও চাটখিল পৌর এলাকা ও লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ পৌর এলাকা ও রায়পুর পৌর এলাকা। নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন। বগুড়া জেলার শান্তাহার পৌর এলাকা ও শেরপুর পৌর এলাকা। জয়পুরহাট জেলার পাচবিবি পৌর এলাকা ও পাবনা জেলার ইশ্বরদী পৌর এলাকা খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপুর ইউনিয়ন ও আড়ংঘাটা ইউনিয়ন, ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়ন এবং যশোর জেলার অভয়নগর পৌরসভা। দিনাজপুর জেলার পার্বতীর পৌরসভা নোয়াখালী জেলার বশুরহাট পৌর এলাকা।

ধাপঃ ঙঃ
    অন্যন্য সকল পৌর এলাকা।

ধাপ- চঃ
    পৌর এলাকা ঘোষিত হয় নাই এমন এলাকা।

(খ) অকৃষি জমিকে ব্যবহার ভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য এই তিন শ্রেণীতে বিভাজন করে প্রতি শতক জমির জন্য উপরের (ক) দফায় বর্ণিত অগ্রসতার ধাপ মোতাবেক নিম্নের ছকে বর্ণিত হারে প্রতি শতক জমির বার্ষিক ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করিতে হইবে।

ধাপ    বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার    শিল্প কাজে ব্যবহৃত জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার    আবাসিক ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত জমির ভূমি উন্নয়ন করের হার
ক ধাপ    ৩০০.০০ টাকা    ১৫০.০০ টাকা    ৬০.০০ টাকা
খধাপ    ২৫০.০০ টাকা    ১৫০.০০ টাকা    ৫০.০০ টাকা
গ ধাপ    ২০০.০০ টাকা    ১৫০.০০ টাকা    ৪০.০০ টাকা
ঘ ধাপ    ১০০.০০ টাকা    ৭৫.০০ টাকা    ২০.০০ টাকা
ঙ ধাপ    ৬০.০০ টাকা    ৪০.০০ টাকা    ১৫.০০ টাকা
চ ধাপ    ৪০.০০ টাকা    ৩০.০০ টাকা    ১০.০০ টাকা


(গ) (১) “আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণীতে রাস্তা এবং সরকারী- বেসরকারী সংস্থার (১ নং খাস খতিয়ান ব্যতীত) আবাসিক ও দাপ্তরিক ভবনাদি বিবেচনা করিতে হইবে। (২) চ ধাপে তথ্য পৌর এলাকা ঘোষিত হয় নাই এমন এলাকায় আবাসিক জমি বলিতে পাকা ভিটির গৃহ বা তৎসংলগ্ন আঙিনা বুঝাইবে।

৩। এই আদেশ ১ জুলাই ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ হইতে কার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে।
৪। খাস জমি ব্যতীত সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থার, পরিবারের বা ব্যক্তির মালিকানাধীন জমির ক্ষেত্রে এই প্রজ্ঞাপনে বর্ণিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রযোজ্য হইবে।

৫। ভূমি উন্নয়ন কর আদায়যোগ্য কোন জমাবন্দিতে জমির পরিমাণে শতকের ভগ্নাংশ থাকিলে তাহা পরবর্তী পূর্ণ শতক ধরিয়া ভূমি উন্নয়ন কর হিসাব করিতে হইবে।

৬। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা নিজ উদ্যোগে এলাকা পরিদর্শন করিয়া ভূমি ব্যবহারের প্রকৃত ধরন অনুযায়ী প্রযোজ্য হারে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় নিশ্চিত করিবেন। ভূমি ব্যবহারের প্রকৃতি পরিবর্তনের কারণে ভূমি উন্নয়ন কর পুনঃনির্ধারনের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন/পৌর ভূমি সহকারী র্কমকর্তা সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে অবহিত করাইয়া অনুমোদন করাইয়া লইবেন।

৭। কোন জমির ব্যবহারের প্রকৃতি পরিবর্তন হইলে উক্ত জমির মালিক নিজ উদ্যোগে বা যে কোন জমির অবস্থান ও ব্যবহারভিত্তিক ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণে সৃষ্ট কোন জটিলতা নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে নির্ধারিত ফি জমা দিয়া সার্ভেয়ার দ্বারা জমি জরিপ করাইয়া প্রকৃত ব্যবহারের ভিত্তিতে উক্ত জমির ভূমি উন্নয়ন কর পুনঃনির্ধারণ করাইয়া লইতে পরিবেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারনের কোন দরখাস্ত পাওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে তাহা নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

৮। সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি বা গোষ্ঠি আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিতে বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন। অনুরুপভাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার এবং বিভাগীয় কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভূমি আপিল বোর্ডে আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধিতে বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে আপিল দায়ের করা যাইবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দায়েরকৃত আপিল ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি)র নিকট দায়েরকৃত মূল কেস বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দায়েরকৃত আপিল কেস ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না হইলে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি বা গোষ্ঠি কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই উপরস্থ কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল দায়ের করিতে পারিবেন। ভূমি আপিল বোর্ডের নিকট দায়েরকৃত আপিল যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

৯। এই মন্ত্রণালয়ের ১১-০৪-১৯৯৩ খ্রিঃ তারিখে ভূঃমঃ/শা-৩/কর/৯৫/৯৩-৯৯৭ (৬১) নং স্মারকে জারিকৃত পরিপত্রে বর্ণিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান হইতে অব্যাহতি প্রাপ্ত ভূমি-মালিকদের দাখিলা প্রদানের রসিদ খরচ ও রেকর্ড সংরক্ষণ ফি এতদ্বারা পরিবর্তন করতঃ প্রতি খতিয়ানে প্রতি বছর ১০.০০ (দশ) টাকা হার নির্ধারণ করা হইল। উক্ত পরিপত্রসহ এই সম্পর্কিত জারিকৃত এই প্রজ্ঞাপনের সহিত অসমঞ্জস নহে এই জাতীয় অন্যান্য সকল আদেশ বহাল থাকিবে।

রাস্ট্রপতির আদেশক্রমে

(মোহাম্মদ শফিউল আলম)
সিনিয়র সচিব
ভূমি মন্ত্রণালয়, ঢাকা।

 

নোটিশ বোর্ড






    google+     skype    rss